স্টাফ রিপোর্টার : সাভারে মেঘনা ফিডের আড়ালে অনুমোদনহীন ফ্রেসটেক এগ্রো লিমিটেড কারখানা খুলে দেওয়ার চারদিন পর আবারও সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করে মূল ফটকে ব্যানার লাগিয়ে দিয়েছে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
এরআগে গত সোমবার মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য ও রাসায়নিক দ্রব্য দিয়ে হাঁস, মুরগি, গরু ও মাছের খাদ্য তৈরি ও বাজারজাতের অভিযোগে কারখানাটিতে অভিযান পরিচালনা করে ১ লাখ টাকা জরিমানা আদায় ও সিলগালা করে দিয়েছিলেন ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সহকারী কমিশনার (ভূমি) জহিরুল আলম।
সাভার উপজেলার ভাকুর্তা ইউনিয়নের মুশুরীখোলা এলাকার অনুমোদনহীন পশু খাদ্য তৈরি ‘ফ্রেসটেক এগ্রো লিমিটেড’ কারখানা নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হলে টনক নড়ে প্রাণিসম্পদ দপ্তরের। এরপরেই অভিযান পরিচালনা করে কারখানাটি সিলগালা করে দেন।
কিন্তু রহস্যজনক কারণে সাভার প্রাণি সম্পদ দপ্তর পুনরায় কারখানাটি খোলার অনুমতি দেন। অনুমোদনহীন কারখানা কিভাবে খুলে কার্যক্রম চালানোর অনুমতি দেওয়া হলো এ বিষয়ে জানতে চাইলে তেমন কোনো সদুত্তোর দিতে পারেনি উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস।
সাভার উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের উপসহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (সম্প্রসারণ) আব্দুল মোতালিব বলেন, ফ্রেসটেক কারখানা কর্তৃপক্ষ আমাদের কাছে আসলে তারা একটি ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে লিখিত অঙ্গীকারনামা দিয়ে জানায় আগামী তিন মাসের মধ্যে তারা কাগজপত্র রেডি করবে। এবং ভিতরে যে কাঁচামাল আছে তা দিয়ে কারখানায় উৎপাদন চালু রাখার অনুমতি চায়। সেই হিসেবে আমরা তাদের অনুমতি দেই। অনুমোদনহীন পশু খাদ্য তৈরীর এই কারখানাটি গত এক বছর ধরে চললেও কেন আপনারা কোন ব্যবস্থা নেননি জানতে চাইলে তিনি বলেন বিষয়টি আমাদের নজরে ছিল না।
জানা গেছে, কারখানাটি সিলগালা করার একদিন পর গত বুধবার থেকে আবার উৎপাদন শুরু করে কর্তৃপক্ষ। সোমবার সকালে পুনরায় কারখানায় অভিযান পরিচালনা করে মেয়াদ উত্তীর্ণ পশু খাদ্য ধ্বংস করে দেওয়া হয়। এছাড়া কারখানাটির মূল ফটকে ‘ফ্যাক্টরিটি সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হলো, আদেশক্রমে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, সাভার’ লেখা ব্যানার লাগিয়ে দিয়েছেন।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ শওকত আলী বলেন, আজ (সোমবার) সকালে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে মেয়াদ উত্তীর্ণ পশু খাদ্যগুলো ধ্বংস করে দেন। এছাড়া কারখানাটি পুনরায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা জানান, ফ্রেসটেক কারখানায় তৈরি খাদ্য মাছ, মুরগি ও গরুকে খাওয়ানো হলে তা বিশাল জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য ঝুঁকির আশঙ্কা রয়েছে। এসব খাদ্য ব্যবহারে দ্রুত সময়ে মাছ, মুরগি ও গরুকে বড় করে উৎপাদন বাড়াতে সহায়তা করে। এসব খাদ্য খেয়ে বেড়ে উঠা মাছ ও মুরগির গোশত, ডিম খেলে মানুষের পেটের অসুখসহ নানারকম রোগ দেহে বাসা বাধতে পারে।