স্টাফ রিপোর্টার : জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, অতীতে যারা ক্ষমতায় ছিলেন তারা কাজ করেননি বরং তারা আত্মস্বার্থ, ব্যক্তিস্বার্থ, শ্রেণিস্বার্থ, গোষ্ঠীস্বার্থ, সংকীর্ণ দলীয়স্বার্থ রক্ষাসহ রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ চরিতার্থ করেছেন। তাই জামায়াতকে সবসময় স্রোতের বিপরীতে কাজ করতে হয়েছে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, জামায়াতে ইসলামী শুধু ভোট বা নির্বাচনকেন্দ্রিক রাজনৈতিক দল নয় বরং আমরা আর্ত-মানবতার মুক্তি ও সমাজের কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন করে দেশকে ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিবর্তন করতে আপসহীন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছি।
শুক্রবার (১৬ মে) বিকেলে রাজধানীর মগবাজারে আল ফালাহ মিলনায়তনে দলটির ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত থানা মজলিসে শুরা ও কর্মপরিষদ সদস্যদের শিক্ষাশিবিরে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জামায়াত আমির।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, জামায়াত নিয়মতান্ত্রিক ও গণতান্ত্রিক পন্থায় রাষ্ট্রের সব ক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন করতে চায়। আমরা এমনভাবে রাষ্ট্রীয় কাঠামোকে ঢেলে সাজাতে চাই যাতে রাষ্ট্রই সব মানুষের অধিকারের নিশ্চয়তা প্রদান করতে পারে। জামায়াত এমন এক সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে চায়, যেখানে মানুষে মানুষে কোনো বৈষম্য বা ভেদাভেদ থাকবে না।
তিনি আরও বলেন, সঙ্গত কারণেই আমরা নানাভাবে জুলুম-নির্যাতনের শিকার হয়েছি। ইসলামী আন্দোলনের ওপর জুলুম-নির্যাতন নতুন কিছু নয় বরং নবী-রাসুলরাও তা থেকে রেহাই পাননি...তাই যে কোনো জুলুম-নির্যাতনে ইসলামি আন্দোলনের কর্মীদের হতোদ্যম হলে চলবে না বরং সব বাধা-প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে ময়দানে আপসহীন ভূমিকা পালন করতে হবে।
জামায়াত আমির বলেন, আমাদের পথচলা অতীতে নির্বিঘ্ন ছিল না; এখনো নয়। স্বাধীনতা পরবর্তীতে ১৯৭২ সালে তদানীন্তন জালিম সরকার জামায়াতকে নিষিদ্ধ করেছিল। ১৯৭৫ সালে তারা সব রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ ঘোষণা করে একদলীয় বাকশালী শাসন কায়েম করেছিল। কিন্তু ইসলামি আন্দোলনের কর্মতৎপরতা কখনোই বন্ধ ছিল না। ১৯৭৮ সালে নিষেধাজ্ঞা ওঠে যাওয়ার পর তা প্রমাণ হয়েছিল। তবে এজন্য বিভিন্ন সময়ে আমাদের অনেক জুলুম-নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে।
জামায়াতে ইসলামী প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধের রাজনীতি করে না বরং ময়দানে জানমালের কোরবানির মাধ্যমে সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রচলিত সব প্রকার অনিয়মের ইতিবাচক পরিবর্তন করতে চায় জানিয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘এ কাজ করতে গিয়েই আমাদের অনেক ভাই শাহাদাতকে হাসিমুখে বরণ করে নিয়েছেন। স্বজন হারিয়েছেন অনেকেই। আমাদেরকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে, আমরা মজলুম হলেও জালেম হবো না।’ এসময় তিনি দ্বীন প্রতিষ্ঠাকে জীবনের উদ্দেশ্য হিসেবে গ্রহণ করতে সবার প্রতি আহ্বান জানান।
কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমানের সঞ্চালনায় শিক্ষাশিবিরে দারসুল কুরআন পেশ করেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ড. মাওলানা আব্দুস সামাদ।
বিষয়ভিত্তিক বক্তব্য রাখেন ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি ড. এ এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম।
উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি নাজিম উদ্দীন মোল্লা, ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য জামাল উদ্দিন, মু. আতাউর রহমান সরকার, মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ, শাহ আলম তুহিন, ইঞ্জিনিয়ার নোমান আহমেদি প্রমুখ।